বাউল-সাধক ফকির মকরম শাহ আর নেই

প্রান্তডেস্ক:সুনামগঞ্জের শতবর্ষী বাউল-সাধক মো. মকরম আলী শাহ ওরফে ফকির মকরম শাহ আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ১০৮ বছর।
শনিবার জোহরের নামাজের পর বাইশগ্রাম বাহাদুরপুর মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে তার জানাজার নামাজ হয়। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে চিরশায়িত করা হয়।
মকরম শাহ বাইশগ্রাম বাহাদুরপুর মাদ্রাসা থেকে প্রাথমিক শিক্ষা নেন। এরপর সিলেটের গোলাপগঞ্জ রানাপিং মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করেন।
ছোটবেলা থেকেই তার মনে সঙ্গীতের প্রতি ছিল অপরিসীম আগ্রহ। মকরম শাহর বাবা সিফাত আলী শাহ দীর্ঘদিন সঙ্গীতের আধ্যাত্মিক সাধনায় ব্রতী হয়ে সঙ্গীত চর্চা করতেন। মকরম শাহও বাবার মতই সঙ্গীত চর্চা শুরু করেন। সে সময় তিনি পিতৃব্য আজম শাহর দ্বারাও অনুপ্রাণিত হন। তিনি মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত হলেও সঙ্গীতের প্রতি গভীর মমতা নিয়ে ফকির জালাল খাঁর নিকট শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। এক সময় তিনি নিজে গান লিখে, স্বকণ্ঠে গাওয়ার মধ্য দিয়ে সঙ্গীতে পথচলা শুরু করেন।
সুনামগঞ্জের মরমী সঙ্গীতের কীর্তিমান পুরুষ শাহ আব্দুল করিম, দুর্বীণ শাহ, কামাল পাশা, আসকর আলী মাস্টার, সফর আলী, সিদ্দেক আলী, মানউল্লাহ্ এবং ময়মনসিংহের সাত্তার মিয়া, ইদ্রিস আলী, আলী হোসেন ও তাহের কবি প্রমুখের সঙ্গে বহু আসরে একসঙ্গে গান পরিবেশন করেছেন মকরম শাহ। ভাটি অঞ্চলে কবিগানের জন্য বেশ জনপ্রিয় ছিলেন তিনি।
স্ত্রী রংমালা বিবির সঙ্গে মকরম শাহর সংসারে এক ছেলে ও চার মেয়ে। ছেলে শাহজাহান সিরাজ বাবার পথ অনুসরণ করে গান লেখেন এবং পরিবেশন করেন।
পঞ্চাশের দশকে ছয় বছর সৌদি আরব ছিলেন মকরম শাহ। তখন তিনি পবিত্র হজ পালন করেন। তিনি সিলেটি নাগরি ভাষায় বিশেষ পারদর্শী ছিলেন।
তার একমাত্র প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ ‘আসা যাওয়া বারণ হইল না’। তাছাড়াও তার অপ্রকাশিত বহু গান রয়েছে।