বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবে মাওলানা আকরম খাঁ হলে শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে শেরেবাংলা জাতীয় যুব স্মৃতি ফাউন্ডেশন।
আলোচনা সভায় আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর প্রসঙ্গে বলেন, ‘বর্তমান সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে, রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে, বিদেশে ধরনা দিচ্ছেন। তাদের নির্ভরশীলতা হচ্ছে রাষ্ট্রের কিছু প্রতিষ্ঠানে ওপরে, অন্য শক্তির ওপরে। প্রধানমন্ত্রী এখন সফরে বের হয়েছেন, এটা হচ্ছে ক্ষমতায় টিকে থাকার শেষ চেষ্টা। এখন দেশে দেশে ধরনা দিচ্ছেন, দুয়ারে দুয়ারে ধরনা দিচ্ছেন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই।’
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের থেকে আওয়ামী লীগ দূরে সরে গেছে। জনগণকে নিয়ে যে রাজনীতি হতে পারে, এটা তারা বিশ্বাসই করে না। কিছু দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী, দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা মিলে একটা রেজিম করেছে, যারা দেশটাকে নিয়ন্ত্রণ করছে। নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দেশটা পরিচালনা করছে। এই রেজিম ক্ষমতায় থাকার জন্য এখন বিদেশের ধরনা দিচ্ছে। একটা কথা পরিষ্কার করে বলে রাখছি— বাংলাদেশের মানুষকে দূরে রেখে যতই বিদেশে ধারনা দেন, কোনও লাভ হবে না। পরাজিত হতে হবে।’
আমির খসরু বলেন, ‘আমরা আন্দোলনে নেমেছি। সেই আন্দোলনে দেশের সব মানুষের সম্পৃক্ততা আছে। সবার অংশগ্রহণ আছে। আওয়ামী লীগের ভয়টা সেখানেই। যে আন্দোলনে দেশের মানুষের সম্পৃক্ততা, অংশগ্রহণ এবং এগিয়ে আসে—সেই আন্দোলনের সম্মুখীন কেউ হতে চায় না।’
তিনি বলেন, ‘যাদের ব্যবহার করে ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছেন, তাদের দ্বিতীয়বার ভাবতে হবে। বিদেশি নিষেধাজ্ঞা নয়, দেশের মানুষ নিষেধাজ্ঞা দেবে। এই ভোটচুরির সঙ্গে কারা কারা জড়িত ছিল, তাদের দেশের মানুষ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। আগামী দিনের ভোটচুরির সঙ্গে কারা কারা জড়িত হতে যাচ্ছে, প্রত্যেকটা মানুষকে বাংলাদেশের মানুষ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। কোন কোন রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি উচ্ছিষ্টভোগী, জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান করছে—বাংলাদেশের মানুষ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে এবং বিশ্ববিবেক কিন্তু বাংলাদেশের ওপর নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ রাখছে।’
শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হককে নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, ‘শেরেবাংলা একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্বের মানুষ ছিলেন। ব্রিটিশ জাজ একবার তাকে (শেরেবাংলা) বলেছিলেন— নবযুগ পত্রিকায় কাজী নজরুল ইসলামকে ব্রিটিশবিরোধী লেখা বন্ধ করতে হবে। তিনি কাজী নজরুল ইসলামকে গিয়ে বলেছিলেন—আরও গরম গরম লিখে ব্রিটিশদের নাড়িয়ে দাও। পরবর্তী সময়ে কিন্তু নবযুগ পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই ছিল তার চরিত্র।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আজকে শেরেবাংলাকে মূল্যায়ন করছি না, এতে কিন্তু ক্ষতি আমাদেরই। তিনি যে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা করেছিলেন—জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়াও সেই ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা করেছিলেন। সেই সমাজ ব্যবস্থাই আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কোনও একদলীয় বাকশাল করা চলবে না।’
শেরেবাংলা জাতীয় যুব স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সভাপতি মো. আখতারুল আলম ফারুকের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল প্রমুখ।