আরাভের পরিবর্তে জেলে যাওয়া সেই যুবক এবার মুখ খুললেন
প্রান্তডেস্ক:পুলিশ কর্মকর্তা হত্যার পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যা মামলায় আসামি আরাভ খান রয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে রয়েছে আরও হত্যা, ধর্ষণ, অস্ত্রসহ অন্তত ৯ মামলা। সে আরাভ ছাড়াও রবিউল ইসলাম, আপন, সোহাগ, হৃদয় ও হৃদি নামে পরিচিত। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়।সম্প্রতি ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান দুবাইয়ে স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনের ঘোষণার পর আলোচনায় আসেন আরাভ।
তথ্যমতে, ২০১৮ সালে পুলিশ কর্মকর্তা মামুন হত্যা মামলায় আরাভ খানসহ আটজনের সংশ্লিষ্টতা পায় ডিবি। এদের মধ্যে আরাভ পলাতক ছিলেন। তাকে গ্রেফতারে পাঁচ দফা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। অবশেষে ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আরাভ। কিন্তু পরে জানা যায়, আরাভ খানের পরিবর্তে জেলে যান চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার আইনপুর গ্রামের নুরুজ্জামানের ছেলে আবু ইউসুফ লিমন।
ইউসুফের আইনজীবী ও ডিবি পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলে যাওয়ার কিছু দিন পর ইউসুফ আদালতকে জানান, তিনি হৃদয় ও আরাভ খান নন। তিনি টাকার বিনিময়ে এবং পরিবারের ভরণপোষণ চালানোর চুক্তিতে হৃদয় সেজে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। পরে বিষয়টি তদন্ত করতে ডিবিকে নির্দেশ দেন আদালত। সেই প্রতিবেদনে বেরিয়ে আসে এই ইউসুফ আসলে হৃদয় নন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ইউসুফ গণমাধ্যমকে বলেন, ফেসবুক সূত্রে আরাভের সঙ্গে পরিচয়। পরে কোনো একসময় ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহের কথা জানান। তখন আরাভ জানান, দেশে আসলে সব ব্যবস্থা করে দেবে। সাকিব আল হাসানের সঙ্গেও খেলার সুযোগ করে দেবে। কিন্তু মামলার কারণে সে দেশে আসতে পারছে না।
তিনি বলেন, তখন আরাভ আমাকে অনুরোধ করে তার হয়ে আদালতে গিয়ে জেলে যেতে। সে আমাকে দেড় মাসের মধ্যে জামিনে মুক্ত করবে। আমার ক্রিকেট খেলার ব্যবস্থা করে দেবে। একসময় আমি তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাই। পরে পরিবারকে না জানিয়ে হৃদয় পরিচয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করি।
ইউসুফ আরও বলেন, জেলে যাওয়ার পর একাধিকবার আমার জামিনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। কারাগারে এই মামলার অন্য আসামিদের সঙ্গে কথা হয়। পরে আমি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি।
ইউসুফের বাবা নুরুজ্জামান বলেন, ইউসুফ তিন মাস জেলে থাকার পর বিষয়টি জানতে পেরেছি। এর পর তার জামিন পেতে আরও ছয় মাস লেগেছে। মোট ৯ মাস সে জেল খেটেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৮ জুলাই রাজধানীর বনানীর একটি বাসায় খুন হন বিশেষ শাখার পুলিশ পরিদর্শক মামুন ইমরান খান। পর দিন তার লাশ বস্তায় ভরে গাজীপুরের উলুখোলার একটি জঙ্গলে নিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।