বান্দরবান থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় পাঁচ শতাধিক বাংলাদেশির
প্রান্তডেস্ক:কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চলমান অভিযানের প্রভাব থেকে বাঁচতে পালিয়ে ভারতের মিজোরামে আশ্রয় নিয়েছেন পাঁচ শতাথিক বাংলাদেশি। তারা সবাই বান্দরবানের বাসিন্দা। বিবিসির এক খবরে এসব তথ্য জানানো হয়।
আশ্রয়প্রার্থীদের বেশিরভাগই বম জনগোষ্ঠীর মানুষ, তবে তাদের সঙ্গে কিছু টংটঙ্গিয়া গোষ্ঠীর মানুষও এসেছেন ভারতে। বম জনগোষ্ঠীটি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী।
দক্ষিণ মিজোরামের লংৎলাই জেলার পাঁচটি গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন ওই বাংলাদেশি নারী-পুরুষরা। মিজোরাম সরকার এবং সেখানকার খ্রিস্টানদের শক্তিশালী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইয়াং মিজো অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসা নারী পুরুষদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করেছেন বলে জানিয়েছে। নিয়মিত খাবারও দিচ্ছেন তারা।
বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘তারা দেশ থেকে পালিয়ে যায়নি, নিরাপত্তাজনিত কারণে কিছু লোকজন চলে গেছে।’
ভারতে পালিয়ে আসা এবারই প্রথম নয়। গত বছরের নভেম্বর থেকে আশ্রয়প্রার্থীরা ভারতে আসতে শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন মিজোরামের এক মন্ত্রী।
তুইচং এলাকায় ইয়াং মিজো অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি রিচিস লালটানপুইয়া বিবিসি বাংলাকে জানাচ্ছিলেন, “আমাদের এলাকায় মোট ১৩২টি পরিবারের ৫৪৮ জন মানুষ বাংলাদেশ থেকে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। আমরা এদের খাবার দিচ্ছি, রান্না করা খাবার না, জিনিস দিয়ে দিই, ওরাই রান্না করে নেয়। পোশাক আর ওষুধও দেওয়া হচ্ছে। ছোট ছোট ঘর বানিয়ে দেওয়া হয়েছে অনেককে।
লংৎলাই জেলার তুইচং এলাকায় পার্ভা-৩ গ্রামেই সব থেকে বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। ইয়াং মিজো অ্যাসোসিয়েশন এবং মিজোরাম সরকার আশ্রয়প্রার্থীদের মাথা গুনছে নিয়মিত। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী ওই শিবিরে ২১৬ জন বাস করছেন।
এদের মধ্যে কেউ বাঁশের ঘর বানিয়ে নিয়েছেন, আবার কেউ বড় হলঘরে বাস করছেন। ঘর বানানোর সরঞ্জামও স্থানীয় মিজোরাই দিয়েছেন।
মঙলিয়াংথাংকোর গ্রাম বাংলাদেশের যে থানা এলাকায়, সেই রুমা থানার ওসি মুহম্মদ আলমগির বিবিসি বাংলার সাঞ্জানা চৌধুরীকে বলেছেন, “পালিয়ে যাওয়ার বিষয় নয় এটা। তারা নিরাপত্তা জনিত কারণে চলে গেছে। এমনিতেই তারা মিজোরাম রাজ্যে আসা যাওয়া করে, ওখানে তাদের অনেক আত্মীয়স্বজন আছে। চলমান অভিযানের কারণে চার-পাঁচ শোর মতো লোক ওখানে চলে গেছে বলে আমরা সংবাদ পেয়েছি।
“অভিযানটা চালানো হচ্ছে কেএনএফের বিরুদ্ধে। ওই সংগঠনের সদস্য যারা, তারা তো এই সম্প্রদায়েরই মানুষ। তারা তো জানে কোন পরিবারের কে ওই সংগঠনের সদস্য। সেখানে তো কেএনএফের সদস্যরা সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। তাই যখন অভিযান জোরদার হয়েছে, তখন গোলাগুলি দেখে সাধারণ মানুষদের কেউ আতঙ্কে হয়তো চলে গেছে। কিন্তু কেউ তাদের চলে যেতে বাধ্য করেনি,” বলেছেন আলমগির।