সেদিনের সেই রাতভর কর্মরত ছাত্রকর্মীদের অনেকেই আজ প্রয়াত অথবা বার্ধক্যপীড়িত। এই নিবন্ধের অন্যত্র যাদের কথার উল্লেখ করেছি, তাদের ছাড়া এই মুহূর্তে আর যেসব ছাত্রকর্মীর নাম এক্ষনে মনে আসছে, তাদের মধ্যে রয়েছে আসাদুজ্জামান, জাহেদ, মামুনুর রশীদ, আবদুর রশীদ, সিরাজ জিন্নাত, কবির, রাব্বি, প্রধান, বরকত, হাই, রাকিব, জোরো প্রমুখ প্রগতিশীল অসাম্প্রদায়িক মেডিকেল শিক্ষার্থী। চব্বিশের ভোরে প্রথম শহীদ মিনার, যখন মাথা উঁচু করে মানুষের দৃষ্টিগোচরে এল, ত্বরিত গতিতে সেই খবর ছড়িয়ে পড়ল শহরময়। সেদিনের ছোট্ট ঢাকার সব পথ এসে মিলল ফুলার রোডে। দলে দলে ছুটে এল মানুষ—বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, তরুণ-তরুণী, প্রৌঢ়-প্রৌঢ়া, ছোট্ট শিশুর দল—সবাই এল শহীদ মিনারের পাদদেশে শহীদদের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা জানাতে। আমাদের হোস্টেল প্রাঙ্গণ লোকে লোকারণ্য, যেন এক পবিত্র তীর্থক্ষেত্র ফুলে ফুলে ঢেকে গেল প্রতিবাদের প্রতীক সেই প্রথম শহীদ মিনার। এই প্রথম শহীদ মিনার এক অসাধ্য সাধন করল—যে আন্দোলন মূলত শুধু ছাত্রদের আন্দোলন, তাকে উৎসারিত করে দিল এক গণ-আন্দোলনে—এখানেই এর তাৎপর্য।