প্রধানমন্ত্রী মোদিকে চরমপন্থী হিসেবে দেখাতে বিবিসির তথ্যচিত্র: জয়শঙ্কর
লক্ষণীয়, বিবিসির তথ্যচিত্র, লাদাখে চীনের জমি দখল কিংবা আদানি গোষ্ঠী–সম্পর্কিত হিনডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদন নিয়ে বিরোধীরা বারবার সংসদে আলোচনার দাবি জানালেও সরকার তা মানেনি। সংসদে এ নিয়ে বিরোধীদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়নি।
পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বিভিন্ন অঞ্চলে চীনা আগ্রাসন ও জমি দখলের অভিযোগ নিয়ে কংগ্রেস, বিশেষ করে রাহুল গান্ধী অনেক দিন ধরেই সরব। তাঁদের অভিযোগ, ২০২০ সালের জুনে গলওয়ানে সংঘর্ষের আগেই ভারতের বিস্তীর্ণ (প্রায় ২ হাজার বর্গকিলোমিটার) এলাকা চীন দখল করে নিয়েছে। একই অভিযোগে সরব লাদাখের বিজেপি নেতৃত্বও। বিরোধীরা এ নিয়ে সংসদে আলোচনার দাবি জানালেও সরকার রাজি হয়নি। প্রতিরক্ষা–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিকে লাদাখের উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শনেও যেতে দেওয়া হয়নি। মৌখিকভাবে শুধু বলা হয়েছে, ভারতের কোনো জমি চীন দখল করেনি।
জয়শঙ্কর বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘চীন সীমান্তে ভারত যত সেনা মোতায়েন করেছে, এ পর্যন্ত কেউ তা করেনি। শান্তির সময়ে এত সেনা কেউ পাকাপাকিভাবে সেখানে রাখেনি। এ জন্য সরকারকে বিপুল অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। সীমান্তে অবকাঠামো তৈরিতে পাঁচ গুণ বেশি অর্থ খরচ করা হচ্ছে। এটা কি মেনে নেওয়ার লক্ষণ? রক্ষণাত্মক মনোভাব?’
ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চীন সম্পর্কে রাহুল গান্ধীর ভালো জ্ঞানগম্যি থাকলে শুনতে আমি রাজি। শেখা জীবনের অঙ্গ। কিন্তু মনে হয়, তাঁদের চীন নিয়ে কোনো সমস্যা আছে। ইচ্ছা করে ভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। পরিস্থিতির ভুল ব্যাখ্যা করছেন। প্যাংগং হ্রদ এলাকায় যে সেতু তৈরির কথা তাঁরা বলছেন, সেই এলাকা ১৯৬২ সাল থেকে চীনের দখলে। চীন ওই এলাকায় প্রথম এসেছিল ১৯৫৮ সালে, তার পর ১৯৬২ সালে। আজ ২০২৩ সালে মোদি সরকারকে সেতু তৈরির জন্য অপরাধী বানানো হচ্ছে!’ জয়শঙ্কর বলেন, ১৯৬২ সালে কী ঘটেছিল, তা স্বীকার করার মতো সৎসাহসও তাঁদের নেই।
গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই সাক্ষাৎকারে জয়শঙ্কর পারিবারিক বিষয়েরও অবতারণা করেন। তাঁর বাবা কে সুব্রহ্মনিয়ম ছিলেন ভারত সরকারের প্রতিরক্ষা উৎপাদন সচিব। ১৯৭৯ সালে জনতা দলের সরকারে সম্ভবত সবচেয়ে কম বয়সে তিনি সচিব হয়েছিলেন। ১৯৮০ সালে ইন্দিরা গান্ধী ভোটে জিতে সরকার গড়লে তাঁকে অপসারণ করা হয়। রাজীব গান্ধী ১৯৮৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হলে জুনিয়র এক আমলাকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব করা হয়েছিল। জয়শঙ্কর তা জানিয়ে বলেন, ‘বাবা দৃঢ়চেতা ছিলেন। স্পষ্ট বক্তা। হয়তো সেটাই তাঁর সমস্যা হয়েছিল, ঠিক বলতে পারব না।’