ভাষা আন্দোলন কর্মী শহীদ শফিকুর রহমান।
প্রান্তডেস্ক: শফিউররহমান (২৪ জানুয়ারি ১৯১৮ – ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২) ছিলেন একজন বাংলাদেশী ভাষা আন্দোলনকর্মী যিনি পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে স্বীকৃতির দাবিতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সৃষ্ট বাংলা ভাষা আন্দোলনে ১৯৫২ সালে নিহত হন। বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাকে শহীদ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
প্রারম্ভিক জীবন
ভাষা আন্দোলন
১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি সকাল দশটার দিকে ঢাকার রঘুনাথ দাস লেনের বাসা থেকে সাইকেলে করে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা হন শফিউর। সকাল সাড়ে দশটার দিকে নওয়াবপুর রোডে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে পূর্বদিনের পুলিশের গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ পুনরায় গুলিবর্ষণ করে। পুলিশের গুলি শফিউর রহমানের পিঠে এসে লাগে। ১৯৫৪ সালের শহীদ সংখ্যা সাপ্তাহিক সৈনিকে তার সম্পর্কে প্রকাশিত বিবরণ থেকে জানা যায়, ঐদিন সকাল ১০টায় তিনি সাইকেলে চড়ে নবাবপুর রোড হয়ে অফিসে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ একটি রাইফেলের গুলি তার পৃষ্ঠভেদ করে বের হয়েছে এবং এতে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সরকারি এ্যাম্বুলেন্স যোগে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে ডা. এ্যালিনসন অপারেশন করেন। ঐদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার সময় তিনি মারা যান। গুলিতে শহীদ শফিউরের কলিজা ছিঁড়ে গিয়েছিল। অপারেশনের সময় সফিউরের মাতা, পিতা, স্ত্রী, মেয়ে শাহনাজ হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যু
মৃত্যুর পর পুলিশ আত্মীয়দের কাছে লাশ হস্তান্তর করেনি। ১৪ মার্চ ১৯৫২ তারিখের দৈনিক আজাদে প্রকাশিত সরকারি তথ্য বিবরণী অনুসারে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট তার জানাজা পড়ান। জানাজায় তার পিতা ও ভাই উপস্থিত ছিলেন। তারপর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাকে আজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। তার কবরের পাশেই রয়েছে পূর্বদিন মৃত্যুবরণ করা আবুল বরকতের কবর।
ব্যক্তিগত জীবন
শফিউর রহমান ১৯৪৫ সালে কলকাতার তমিজউদ্দিনের কন্যা আকিলা খাতুনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
একুশে পদক
২০০০ সালে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে শফিউর রহমানকে একুশে পদক (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়।] এছাড়া ২০০৬ সালে ভাষা আন্দোলনে মৃত্যুবরণ করা অন্যান্য পরিবারের পাশাপাশি তার স্ত্রী বেগম আকিলা খাতুনকে আজীবন ভাতা প্রদানের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ সরকার।