জাতীয় পার্টির সভাপতির নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ!
প্রান্তডেস্ক:১৯৮৯ সালের ১৬ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার অনুমোদনে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ কাজ শুরু করে ড. এনায়েত রহিম এবং ড. নূরন্নবীর নেতৃত্বে। এটি স্বাধীন একটি সংগঠন। বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাথে এর কোন সাংগঠনিক সম্পর্ক না থাকলেও একই আদর্শে কর্মরত বলে সুন্দর একটি যোগাযোগ রয়েছে দুই সংগঠনের মধ্যে।
তবে তার অর্থ এই নয় যে, ড. নূরুন্নবীর নেতৃত্বে সক্রিয় যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের বিরুদ্ধে আরেকটি কমিটি দিতে হবে। আর এমন সময়ে কমিটির নামে প্রবাসে বিভ্রান্তির অপচেষ্টার অবতারণা করা হয়েছে যখন মুজিববর্ষ উদযাপনে বড় ধরনের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে রয়েছেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
এই সংগঠনের সাথে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কর্মরতরা বিস্ময় ও হতাশা প্রকাশ করেছেন যে, ঢাকার কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে যার নেতৃত্বে (রাব্বি আলম) কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে তিনি নতুন বাংলা ছাত্র সমাজের পথ বেয়ে মিশিগান স্টেট জাতীয় পার্টির সভাপতি। গত বছরের একুশে ফেব্রুয়ারিতে মিশিগানে অস্থায়ী শহীদ মিনারে জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে রাব্বি আলম শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করছেন। সে ছবিসহ সংবাদের কপি ফেসবুকেও ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এমনি অবস্থায় তার নাম যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি হিসেবে দেখে সকলেই হতবাক।
যাকে এক মুহূর্তের জন্যে আওয়ামী পরিবারের কোন কর্মকান্ডে কখনোই দেখা যায়নি তাকে কীভাবে ঢাকাস্থ বঙ্গবন্ধু পরিষদের অনুমোদন দেয়া হলো সে প্রশ্ন প্রবাসীদের। কথিত ঐ অনুমোদিত কমিটিতে এমন অনেকের নাম রয়েছে যারা অজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং ক্ষোভ জানিয়েছেন রাব্বি আলমের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে রাব্বি আলম এনআরবি নিউজকে মিশিগান থেকে টেলিফোনে জানান, ‘আমি কখনোই নতুন বাংলা ছাত্র সমাজে ছিলাম না কিংবা মিশিগান স্টেট জাতীয় পার্টির সাথেও জড়িত নই। এগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি সারাজীবনই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারি। সেজন্যেই বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ডা. এস এ মালেক অনুমোদন দিয়েছেন আমার নেতৃত্বাধীন নতুন কমিটির।’
মিশিগান স্টেট আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, মুজিব আদর্শে কখনোই যাকে দেখা যায়নি, তেমন ব্যক্তির নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু পরিষদ গঠনের কারণ কি? মুজিববর্ষে সকলেই যেখানে ব্যস্ত নানা কর্মসূচি নিয়ে তেমন সময়ে এমন উদ্ভট পরিস্থিতির নেপথ্যে কারা রয়েছে তা উদঘাটনে সংশ্লিষ্টদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন মিশিগান আওয়ামী পরিবারের লোকজন। মিশিগান বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ এ নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করছেন।
এ নিয়ে ক্ষুব্ধ যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি রাফায়েত চৌধুরী এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছেন, বন্ধুর কন্যা, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সম্মেলনে এসে নিজ হাতে ড. এনায়েত রহিম ও ড. নুরুন নবীকে আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক করে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ গঠন করেন। সেই থেকে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ স্বাধীনভাবে কার্যক্রম পারিচালনা করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ কারও সহযোগী বা কোন কেন্দ্রীয় কমিটির অধীনে নয়।
১৯৯৬ সালে ড. নুরুন নবীকে সভাপতি নির্বাচিত করে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করে আজ অবধি বিভিন্ন কার্যক্রম যথা দুইটি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ সম্মেলন, দশটি বঙ্গবন্ধু স্মারক বক্তৃতা, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন এবং মৃতৃবার্ষিকী তথা জাতীয় শোক দিবস পালন করে আসছে। বর্তমানে আমরা বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ কনভেনশন- ২০২০’ আয়োজন করতে ব্যস্ত। এই সময়ে একটি মহল বঙ্গবন্ধু পরিষদের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা সকল বঙ্গবন্ধু অনুসারীকে আহ্বান জানাচ্ছি , অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে মার্চ ২৮-২৯ তারিখে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ কনভেনশন সাফল্য মন্ডিত কারার জন্যে কাজ করি।
প্রসঙ্গত, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শভিত্তিক লেখালেখির জন্যে ড. নূরুন্নবীকে চলদি বছরের একুশে পদকে ভূষিত করা হয়েছে। যে পদক প্রধানমন্ত্রীর কাছে থেকে গ্রহণের জন্যে বর্তমানে তিনি ঢাকায় রয়েছেন।
অপরদিকে, রাব্বি আলম প্রেরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্র থেকে অনুমোদিত (সাধারণ সম্পাদক ডা. এস এ মালেক) যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ এর নতুন কমিটির কর্মকর্তার মধ্যে রয়েছেন- আহ্বায়ক: ড. এম ডি রাব্বী আলম (মিশিগান), যুগ্ম-আহ্বায়ক: আনোয়ার কবির খাঁন (মিজোরি), কৃষিবিদ শেরে আলম রাসু (মিজোরি), রেহান রেজা (ক্যানসাস), ডা. মাসুদুল হাসান (নিউ ইয়র্ক), খান শওকত (নিউইয়র্ক), মোহাম্মাদ আলমগির (ভারজিনিয়া), নাহিদা নাসের ইয়াসমিন (টেক্সাস), নুর বাবুল (ক্যালিফোরনিয়া), এম ডি আলী হুসাইন (জর্জিয়া), ড. সুলতান সালাউদ্দিন আহমেদ (ফ্লোরিডা), এবং আতিকুর রহমান (ফ্লোরিডা)।
কার্যকরী সদস্য- ড. খাজা শাহাব আহমেদ (মিশিগান), মাহমুদ কাইকোবাদ (টেক্সাস), ড. আব্দুল বাতেন (নিউইয়র্ক), সোরাফ সরকার (নিউইয়র্ক), এম ডি শাহাবউদ্দিন (মিশিগান), ড. রশিদ মালিক (জর্জিয়া), আব্দুর রাজ্জাক তালুকদার (মিজোরি), এবং মিনহাজ আহমেদ (নিউইয়র্ক), মিনহাজ রাসেল চৌধুরী (মিশিগান), সাফুল্লাহ চৌধুরী লেবু (ফ্লোরিডা), দেওয়ান আরশাদ আলী বিজয় (ভারজিনিয়া), মোঃ রহমান বাদল (পেনসেলভেনিয়া), হাবিব মুরশেদ (নেব্রাস্কা), ড. মুনসুর রহমান (ইন্ডিয়ানা), অজিত কল্পনা দাস (মিশিগান), অবসর এসএসজি লিও নারদ্য (মেরিল্যান্ড), কানুন দনাল বড়ুয়া (মিশিগান), মেহরাজ ফাহমি (নিউইয়র্ক), এবং এম ডি নুরুল হাসান পারভেজ (মিশিগান)।