বেড়েই চলছে মৃতের সংখ্যা,উহানের রাজপথে নিথর দেহ
প্রান্তডেস্ক:প্রায় জনমানবহীন রাস্তায় পড়ে রয়েছে এক ব্যক্তির নিথর দেহ। মাথায় সামান্য ধূসর চুল, মুখে মাস্ক। হাতে তখনও ধরা প্লাস্টিকের ব্যাগ। আশপাশে হাতে গোনা লোক। কিন্তু তারাও মরদেহের কাছে ঘেঁষতে ভয় পাচ্ছেন। চীনের উহান শহরের এই দৃশ্য দেখে শিউরে উঠছে গোটা বিশ্ব। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি এখন ঠিক এটাই। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। পরিস্থিতি এমন যে, আজ গোটা বিশ্বের জন্য স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা জারি করতে হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিইউএইচও)-কে।চীনের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আজ রাত পর্যন্ত এই মারণ ভাইরাসের আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ২১৩ জনের। শুধু উহানেই মারা গেছেন ২০৪ জন। গতকাল পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯,৬৯২। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ১৮টি দেশে ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। আমেরিকা, ব্রিটেন, ইটালিসহ অনেক দেশই আপাতত চীন থেকে বা চীনগামী উড়ান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।উহানের রাস্তায় যে ব্যক্তির দেহ পড়েছিল, তিনিও ওই ভাইরাসের আক্রমণেই মারা গেছেন বলে ধারণা। বয়স ষাটের আশপাশে। খুব সম্ভবত তিনি খাবার কিনতে বেরিয়েছিলেন। তবে তার পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত ৯ পুলিশ। তার দেহ যারা আনতে গিয়েছিলেন, সেই স্বাস্থ্যকর্মীরাও সংক্রমণের ভয়ে আতঙ্কিত। আপাদমস্তক ধাতব পোশাক পরে তারা উদ্ধারকাজ চালান। আতঙ্কে পুলিশও।এরই মধ্যে ব্রিটেনে প্রথম করোনাভাইরাসের লক্ষণ মিলেছে দুই চীনা পর্যটকের দেহে। চীন থেকে যেসব ব্রিটিশ নাগরিককে ‘এয়ারলিফ্ট’ করে ব্রিটেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, আগামী দু’সপ্তাহ তাদের প্রত্যেককেই আলাদাভাবে রেখে পর্যবেক্ষণ করা হবে। সিঙ্গাপুর, মঙ্গোলিয়ার মতো বেশ কয়েকটি দেশ চীনের পর্যটকদের তাদের দেশে ঢোকার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ওই সব দেশ থেকেও চীনে কেউ যাচ্ছেন না আপাতত। ইটালি সরকারও এ নিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে। ভাইরাস আক্রান্ত চীনের হুবেই প্রদেশ থেকে ৩৬১ জন বাংলাদেশি নাগরিককে ফিরিয়ে আনতে আজ সন্ধ্যায় উহান রওনা হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের বিমানও। বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে, ওই ৩৬১ জন ঢাকা পৌঁছানোর পরে বিামবন্দরের কাছে একটি হজ শিবিরে তাদের পর্যবেক্ষণের জন্য আলাদা করে রাখা হবে।