এই দিনে::৩০ মে
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ মে, ২০২৩ ৪:৩৩ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ৩৮ বার পঠিত
সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারজয়ী রুশ কবি, কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক বরিস পাস্তারনাক ১৯৬০ সালের ৩০ মে মৃত্যুবরণ করেন। বরিস পাস্তারনাকের জন্ম ১৮৯০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি মস্কোতে। অবশ্য তাদের পরিবারের শেকড় ছিল ইউক্রেনে। পাস্তারনাক ছোটবেলা থেকেই তার পরিবারের এবং পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল এমন অনেক বিখ্যাত ব্যক্তির সান্নিধ্য পেয়েছেন। তার বাবা লিওনিদ পাস্তারনাক ছিলেন পোস্ট-ইমপ্রেশনিস্ট চিত্রকর এবং ‘মস্কো স্কুল অব পেইন্টিং স্কাল্পচার অ্যান্ড আর্কিটেকচার’-এর অধ্যাপক। তার মা রোসা কফমান কনসার্টে পিয়ানো বাজাতেন। কিংবদন্তি রুশ লেখক লেভ তলস্তয়ের সঙ্গে ছিল পাস্তারনাকের বাবার বন্ধুত্ব। ছেলেবেলায় তিনি বাবাকে তলস্তয়ের বইয়ের প্রচ্ছদ আঁকতে দেখেছেন। বাবা লিওনিদ যখন তলস্তয়ের মৃত্যুশয্যায় তার স্কেচ করছিলেন, তখনো বরিস তার সঙ্গেই ছিলেন। পাস্তারনাকদের পরিবারের সঙ্গে তলস্তয় ছাড়াও আরও অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের ঘনিষ্ঠতা ছিল। পিয়ানোবাদক ও সুরকার সের্গেই রাখমানিসোফ, সুরকার ও পিয়ানোবাদক আলেকজান্ডার স্ক্রিয়াবিন, রুশ অস্তিত্ববাদী দার্শনিক লেভ শেস্টভ প্রমুখ। স্ক্রিয়াবিনের প্রত্যক্ষ প্রভাব ছিল পাস্তারনাকের বালক মানসের ওপর। তার প্রভাবেই পাস্তারনাক প্রথমে সংগীতজ্ঞ হতে চেয়েছিলেন। তারপর ১৯১০ সালে হঠাৎ করেই চলে যান জার্মানিতে। সেখানকার ইউনিভার্সিটি অব মারবার্গে পড়াশোনা শুরু করেন। সেখানে তিনি নব্য কান্টিয় হারমান কোহেন, নিকোলাই হার্টম্যান ও পল নাটর্পকে শিক্ষক হিসেবে পান। এমন অনেক মহীরুহের ছায়ায় বড় হয়েছেন পাস্তারনাক। ১৯১৭ সালে পাস্তারনাকের রচিত ‘মাই সিস্টার-লাইফ’-কে রুশ ভাষার সবচেয়ে প্রভাবশালী কাব্যগ্রন্থ বলে মনে করা হয়। কবিতা-উপন্যাসের পাশাপাশি রুশ অনুবাদ সাহিত্যেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন পাস্তারনাক। তার অনুবাদে গ্যেটে, শেকসপিয়ারসহ আরও কিছু নাট্যকারের নাটক জনপ্রিয়তা পায় রুশ দর্শকদের কাছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পাস্তারনাকের প্রথম পরিচয় দুনিয়াখ্যাত উপন্যাস ‘ডক্টর জিভাগো’র জন্য। ১৯০৫ সালের রুশ বিপ্লব এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ের কথা তুলে ধরা হয়েছে এ উপন্যাসে। ১৯৫৮ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান বরিস পাস্তারনাক। কিন্তু তার নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তিতে নাখোশ হয় সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টি। তাকে বাধ্য করা হয় নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করতে। অবশ্য তার মৃত্যুর পর ১৯৮৮ সালে তার উত্তরসূরিরা গ্রহণ করেন এ পুরস্কার।