মাদরাসার ৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে

প্রান্তডেস্ক:সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের দেওয়ানগঞ্জ নুরুল কোরআন কওমি মাদরাসার মুহতামিম মুফতি আশরাফ আলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্ম, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গত ২১ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে এমন অভিযোগ করেন জিংলীগড়া গ্রামের একলেমুর রেজা আকন্দ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাদরাসাটিতে ২২ জন শিক্ষকের বিপরীতে বর্তমানে ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক সহযোগিতায় মাদরাসাটি পরিচালিত হয়ে আসছে। অথচ গরিব, অসহায়, ধর্মভীরু অভিভাবকদের কাছ থেকে ভর্তি ফি, পরীক্ষা ফিসহ প্রতিমাসে অনেক টাকা নেওয়া হয়। মুহতামিম মুফতি আশরাফ আলী কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে নিয়মবহির্ভূতভাবে এভাবে টাকা তোলেন। তিনি পকেট কমিটির মাধ্যমে মাদরাসা পরিচালনা করে আসছেন। মাদরাসার কার্যক্রম অডিটের কোনো সুযোগ দেন না তিনি।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি পাইকুরাটি ইউপি চেয়ারম্যানের মনোনীত সাত সদস্যের একটি অডিট টিম মাদরাসার আয়-ব্যয়ের অডিট করে। এতে দেখা যায়, প্রায় আট লাখ টাকার কোনো হিসাব নেই। এই টাকা মুহতামিমের পকেটস্থ হয়েছে। আশরাফ আলী মাদরাসায় শিক্ষক নিয়োগ বা বেতন বৃদ্ধি সব নিজের ইচ্ছামতো করে থাকেন। তিনি শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে বেশিদিন রাখতেন না। কিছুদিন কাজ করিয়ে বেতন না দিয়ে বিদায় করে টাকা আত্মসাৎ করতেন। এভাবে ঘন ঘন তিনি শিক্ষক নিয়োগ এবং তাদের বাদ দিতেন। তিনি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দিয়ে গরুর ঘাস কাটা, বাসার বাজার করানো, বিভিন্ন গ্রাম থেকে বাঁশ বহন করে আনাসহ বিভিন্ন ধরনের কায়িক পরিশ্রম করান। মাদরাসার টাকা ব্যয় করে নিজস্ব বাসভবন তৈরি করেছেন। ওই ভবনে একটি ছোট খাস কামরা রয়েছে। সেখানে শিক্ষার্থীদের দিয়ে নানা সেবা নেন। সেই খাস কামরায় অন্য কারো যাওয়ার অনুমতি নেই। তিনি মাদরাসা বা মসজিদের উন্নয়নমূলক কাজকে পুঁজি করে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অনেক মানুষ তার কাছে টাকা পান। সেই টাকা চাইলে তিনি তাদের লাঞ্ছিত এবং মাদরাসার শিক্ষার্থীদের লেলিয়ে দিয়ে অনেককে অপমান করেছেন। দু-একবার বিভিন্ন অপকর্মের দায়ে জনরোষে পড়ে এলাকা থেকে পালিয়েও বেঁচেছেন। ধর্মের দোহাই দিয়ে কিছু মানুষের সমর্থন নিয়ে এই অপকর্মগুলো তিনি করে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
পাইকুরাটি ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ইকবাল জানিয়েছেন, অভিযোগপত্রে আমি সুপারিশ করেছি। ওই শিক্ষক তার খাস কামরায় অনৈতিক কার্যকলাপ চালান বলেও অভিযোগ উঠেছে, যার প্রমাণ রয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষক আশরাফ আলী বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা কোনো অভিযোগই সত্য নয়। বিগত সময়েও আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র হয়েছে। অভিযোগকারী আরেকটি মাদরাসার সঙ্গে জড়িত। তার মাদরাসা এখনো প্রাথমিকের স্তর পার হতে না পারার কারণে ঈর্ষান্বিত হয়ে এমন অভিযোগ করেছেন।