মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বেসরকারি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির আয়োজনে ’রিস্টোরিং পিস ইন মিয়ানমার: টু ইয়ারস আফটার মিলিটারি ক্যু’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন।তারা বলেন, ‘সামরিক শাসনের অবসানের মাধ্যমে এ অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আসবে এবং এজন্য সবপক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ‘এ অঞ্চলের সাংঘর্ষিক ভূ-রাজনীতি অনেক পুরনো। এখানে ভারত চীনকে কোনঠাসা করা চেষ্টা করছে। আবার চীন ভারতকে একদিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের ‘বার্মা অ্যাক্ট’ এ অঞ্চলের সাংঘর্ষিক পরিস্থিতিতে আরও জটিল করতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি হয়তো আমাদের জন্য ভালো হবে না। এক্ষেত্রে আমার বিবেচনায় আমাদের হাতে তিনটি অপশন আছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বলতে পারি, এই অঞ্চলে আমরা সংঘর্ষ চাই না। তোমরা যদি সংঘর্ষ করতে চাও, নিজেদের এলাকায় করো। আমার বিবেচনায় এটি সবচেয়ে ভালো অপশন।‘
অন্যান্য দুটি অপশনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথমত, আমরা প্রতিরক্ষা-কেন্দ্রিক ব্যবস্থার ওপর নির্ভর না করার নীতি অনুসরন করতে পারি। দ্বিতীয়ত, এই সংঘর্ষে সরাসরি অংশ নিতে পারি এবং সেক্ষেত্রে চীন অথবা ভারত– যে কোনও একটি দেশকে বেছে নিতে হবে, কারণ এখানে দুইপক্ষের সঙ্গেই থাকা যাবে না।‘
মিয়ানমারের বিতাড়িত সরকার ন্যাশনাল ইউনিটি গর্ভনমেন্টের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জো ওয়েই সো বলেন, ‘আমি রাজনীতিবিদ নই, একজন চিকিৎসক। কিন্তু আমি এখানে এসেছি কারণ এটি জনগণের যুদ্ধ।’
রোহিঙ্গাদের এনইউজি কীভাবে দেখে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা আমাদের লোক এবং তারা আমাদের একজন।’
মিয়ানমারের ৫০ শতাংশেরও বেশি অঞ্চল এনইউজি নিয়ন্ত্রণ করে এবং এ পর্যন্ত ২০ হাজারের বেশি সামরিক সৈন্য মারা গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা শূন্য থেকে শুরু করেছিলাম এবং এখন আমরা অর্ধেক পথ অতিক্রম করেছি। বর্তমানে আমাদের সৈন্য সংখ্যা ৩ লাখেরও বেশি এবং আমরা অবশ্যই এই যুদ্ধে জিতবো।’
আলোচনায় রোহিঙ্গা প্রতিনিধি হ্লা মিন্ট বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম এখন এক হচ্ছে। কারণ আমরা বুঝতে পেরেছি যে, এক না থাকলে আমাদের সমস্যা হবে।’
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ইস্টার্ন অ্যাপ্রোচ (চীনের নীতি) অনুসরণ করছে, যা ব্যর্থ হয়েছে। এখন আমাদের পশ্চিমা নীতি (বার্মা অ্যাক্ট) অনুসরণ করা প্রয়োজন।’