নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারবিষয়ক প্রস্তাব পাস
প্রান্তডেস্ক:জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ৭৪ বছরে মিয়ানমারের বিষয়ে প্রথমবারের মতো প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। প্রস্তাবে সহিংসতার অবসানের দাবি করা হয়েছে এবং দেশটির সামরিক শাসকদের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা অং সান সুচি সহ সকল রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুচির নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করে। এরপর তাকে এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া সামরিক জান্তা গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভ ও ভিন্নমতের ব্যাপক প্রতিক্রিয়া জানায়, যার জেরে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এবং ১৬ হাজারের বেশি মানুষকে জেলে যেতে হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত বারবারা উডওয়ার্ড ভোটের পর বলেন, আজ আমরা সামরিক বাহিনীকে একটি দৃঢ় বার্তা পাঠিয়েছি। আমরা আশা করি, এই প্রস্তাবটি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হবে। আমরা মিয়ানমারের জনগণকে একটি স্পষ্ট বার্তাও পাঠিয়েছি যে- আমরা তাদের অধিকার, তাদের ইচ্ছা এবং তাদের স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অগ্রগতি চাই।
এর আগে মিয়ানমার সম্পর্কিত একমাত্র অন্য প্রস্তাবটি ১৯৪৮ সালে নিরাপত্তা পরিষদ দ্বারা গৃহীত হয়েছিল, যখন সংস্থাটি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেশটিকে (তখন বার্মা নামে পরিচিত) বিশ্ব সংস্থার সদস্য হিসাবে স্বীকার করার সুপারিশ করেছিল।
তিনি বলেন, চীন চেয়েছিল নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমারের বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি গ্রহণ করুক, প্রস্তাব নয়।
রাশিয়ার জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, মস্কো মিয়ানমারের পরিস্থিতিকে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখে না এবং তাই বিশ্বাস করে যে এটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের দ্বারা মোকাবেলা করা উচিত নয়।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অধিগ্রহণ, অভ্যন্তরীণ জনগণের বিরোধিতা, সশস্ত্র প্রতিরোধসহ বর্তমান পরিস্থিতিকে জাতিসংঘের কিছু বিশেষজ্ঞ ‘গৃহযুদ্ধ’ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।
গ্রুপ বার্মা ক্যাম্পেইন ইউকে এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে সংস্থাটি বলেছে যে এটি কোন বাস্তবিক প্রভাব ফেলবে না এবং মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর উপর বৈশ্বিক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত ছিল সবচেয়ে ভালো পদক্ষেপ।
প্রস্তাবে সহিংসতা কমাতে এবং একটি টেকসই রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছানোর জন্য শান্তিপূর্ণ, সত্যিকারের এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়া হয়।
এছাড়া রাখাইন রাজ্যে সংকট মোকাবেলা করার এবং জাতিগত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের প্রত্যাবর্তনের জন্য শর্ত তৈরি করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়। ২০১৮ সালের আগস্টে সেনা নির্যাতনের মুখে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এখনও এসব রোহিঙ্গদের ফেরতের বিষয়ে কোনো সমাধান মেলেনি।