দিঘি রক্ষায় মানববন্ধন
প্রান্তডেস্ক:সিলেট মহানগরী একসময় ছিল দিঘির নগরী।মহানগরীর অনেক এলাকার নাম ছিল দীঘির নামানুসারে য়েমন ধোপাদিঘির পার, মাছুদি ঘিরপার, লালা দিঘির পার,ইত্যাদী।দিঘির নামানুসারে উক্তএলাকা গুলো টিকে থাকলেও দিঘি গুলোর অস্তিত্বআজ বিলিন প্রায়। পুকুর-দিঘি রক্ষায় জনসচেতনতা তৈরী হলেও ভূমিখেকো চক্র পুকুর-দিঘি ভরাটের চেষ্টা বন্ধ করেনি। জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ অবজ্ঞা করে সিলেটের মাছুদিঘির একাংশ সুপরিকল্পিত ভাবে ভরাট করা হয়েছে। সেই ভড়াটকৃত স্থানে সম্প্রতি স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা করা হয়।
এই অপচেষ্টার প্রতিবাদে ও ভূমিখেকোদের হাত থেকে মাছুদিঘি রক্ষা, সংস্কার ও পুনঃখননের দাবিতে মঙ্গলবার বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও মাছুদিঘি পাড়ের স্থানীয় বাসিন্দাদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজন করা হয় মানববন্ধন কর্মসুচি। বেলা সাড়ে বারোটায় মির্জাজাঙ্গাল-তালতলা সড়কের মাছুদিঘির পাড় মোড়ে আয়োজন করা এই কর্মসুচিতে এলাকার সর্বস্থরের শতাধিক নাগরিক অংশগ্রহণ করেন। স্থানীয় মুরুব্বী সিরাজ বখতের সভাপতিত্বে কর্মসুচি পালনকালে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট শাখার সাধারন সম্পাদক আব্দুল করিম কিম।
তিনি বলেন, মাছুদিঘিকেও নগরীর অন্যান্য দিঘির মত নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হবে। তাই দিঘি রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ কর্মসুচি প্রয়োজন। তিনি বলেন, একের পর এক পুকুর-দিঘি নিশ্চিহ্ন হওয়ায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাছে অবশিষ্ট পুকুর-দিঘি রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি আমরা বিভিন্ন সময়ে জানিয়েছি। সেই দাবীর প্রেক্ষিতে নগরীর পুকুর-দিঘি রক্ষার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। দুঃখের বিষয় ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে এই কমিটির একটি সভা হয়। সেই সভায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। উপরন্তু এক বছরেও কমিটির আর কোন সভা আহবান করেনি সিলেট সিটি কর্পোরেশন। এই অবস্থায় নগরের কেন্দ্রস্থলে শতবর্ষ প্রাচীন মাছুদিঘির ভরাট করা অংশে স্থাপনা নির্মান করার ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শান্তনু দত্ত সন্তু বলেন, এই দিঘির ভরাট হয়ে যাওয়া অংশ খনন করে দিঘিকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নেয়া উচিত। এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসাবে এই আন্দোলনের সাথে একাত্বতা প্রকাশ করছি।
সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর শাহানা ইসলাম (শানু) বলেন, এই দিঘির কারনে এখানকার পরিবেশ অনেক সুন্দর কিন্তু দিঘিতে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। অবিলম্বে সেই অবর্জনা অপসারণের উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা সেই উদ্যোগ নিচ্ছি।
ভূমিসন্তান বাংলাদেশের সমন্বয়ক আশরাফুল কবির বলেন, দিঘিগুলো সিলেটের ঐতিহ্যের অংশ। দিঘির নামেই সিলেটের বিভিন্ন এলাকার পরিচিতি রয়েছে। সিলেটকেও বলা হতো দিঘীর শহর। অথচ এই শহরেই এখন দিঘী নেই। পরিবেশ ও ঐতিহ্য রক্ষার স্বার্থে দিঘিগুলো সংরক্ষণ করা উচিত।
কর্মসুচিতে আরো বক্তব্য রাখেন সিলেট কৃষি বিশবিদ্যালয়ের সহযোগী অধাপক বাসু দেব পাল, ভূমিসন্তান বাংলাদেশ-এর সমন্বয়ক আশরাফুল কবির, স্থানীয় মুরুব্বীনাকু দে, আলতাফ হোসেন লষ্কর, রফিক বখত, জাফর খান প্রমুখ।
মানববন্ধনে অংশগ্রহন করেন স্থানীয় এলাকাবাসীদের মধ্যে বেলাল হোসেন, তপন পাল, উপেন্দর দেব নাত, বিমলেন্দু কুমার দে, আলতাফ বখত, ডাঃ রাসেল আহমদ, সাহেদ বখত, ছালিক আহমদ, সাদাত খান, নমিত কুমার দে, সাঈদ খান, বিধান দাশ, মিনহাজ খান, শংকর লাল, মুরাদ হোসেন, সায়েম আহমদ প্রমুখ।