উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধা
প্রান্তডেস্ক:শিশুসাহিত্যিক, চিত্রশিল্পী ও বাংলার আধুনিক মুদ্রণশিল্পের অন্যতম পথিকৃৎ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর জন্ম ময়মনসিংহের মসুয়া গ্রামে ১৮৬৩ সালের ১০ মে। তার বাবার নাম কালীনাথ রায় ওরফে শ্যামসুন্দর মুনশি। ১৮৮০ সালে ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে বৃত্তি নিয়ে তিনি প্রবেশিকা পাস করেন। স্কুলজীবনেই তিনি চিত্রাঙ্কনে দক্ষতা অর্জন করেন। কলকাতা মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউট থেকে ১৮৮৪ সালে তিনি বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
১৮৮৩ সালে ছাত্রাবস্থায় সখা পত্রিকায় তার প্রথম রচনা প্রকাশিত হয়। সমগ্র জীবনেই নিরবচ্ছিন্নভাবে তিনি সাহিত্যচর্চা অব্যাহত রাখেন। ছড়া, কবিতা, গান, গল্প, নাটক, বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ, রূপকথা, উপকথা, পৌরাণিক কাহিনী ও বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী রচনাসহ শিশু-কিশোর সাহিত্যের প্রায় সব শাখায় বিচরণ করেন। স্বরচিত গ্রন্থে স্ব-অঙ্কিত চমকপ্রদ নানা চিত্র সংযোজন তার প্রকাশনার বৈশিষ্ট্য। তার সম্পাদনায় ১৯১৩ সালে শিশুতোষ মাসিক পত্রিকা সন্দেশ প্রকাশিত হয়। লেখার পাশাপাশি নিজের আঁকা নানা বুদ্ধিদীপ্ত ছবি সংযোজনের মাধ্যমে সন্দেশকে তিনি কিশোর হৃদয়ের যোগ্য পত্রিকা হিসেবে গড়ে তোলেন।
তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থছোটদের রামায়ণ, ছোটদের মহাভারত, টুনটুনির বই এবং গুপী গাইন বাঘা বাইন। তিনি তার প্রথম বই ছোটদের রামায়ণের চিত্রমুদ্রণমানে অসন্তুষ্ট হয়ে ১৮৯৫ সালে বিলাত থেকে আধুনিকতম যন্ত্রপাতি নিয়ে এসে নিজেই ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন। গণিতে গভীর ব্যুৎপত্তি এবং সূক্ষ্ম বৈজ্ঞানিক দৃষ্টির সাহায্যে তিনি অনেক নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। তার প্রতিষ্ঠিত ‘ইউ রায় অ্যান্ড সন্স’ কোম্পানির মাধ্যমেই ভারতবর্ষে প্রসেস-মুদ্রণশিল্প বিকাশের সূত্রপাত ঘটে। তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। ১৯১৫ সালের ২০ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।