মোদীর কুশপুত্তলিকা পোড়ালো ছাত্র ইউনিয়ন
প্রান্তডেস্ক: ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ঘিরে দিল্লিতে সংঘাতের প্রতিবাদে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কুশপুত্তলিকা পুড়িয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন।‘ঢাকা-দিল্লির জনগণ একসাথে লড়বে সাম্প্রদায়িকতা ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে’ স্লোগান নিয়ে শুক্রবার বিকালে ঢাকার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে তারা বিক্ষোভ করে।বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে দিল্লির সহিংসতার আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে মোদীকে জানানো আমন্ত্রণ বাতিলের দাবি জানানো হয় এ বিক্ষোভ থেকে।
ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল বলেন, “বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল একটি অসাম্প্রদায়িক আদর্শের উপর ভিত্তি করে। সেই দেশের জনকের জন্মশতবার্ষিকীতে একজন স্বীকৃত খুনী, একজন ফ্যাসিস্টের আগমন আমরা কোনোভাবেই মানতে পারি না।“শুধু বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান নয়, কোনোদিন মোদী বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখতে পারবে না। নরেন্দ্র মোদী যদি বাংলাদেশে আসে, তাহলে ত্রিশ লাখ মানুষ যারা এদেশের জন্য জীবন দিয়েছে, তাদের রক্তের সাথে এ সরকার প্রতারণা করবে। যারা অসাম্প্রদায়িকতার জন্য জীবন দিয়েছে, তাদের প্রতি অপমান হবে।”সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে নোবেল বলেন, “মন্ত্রীরা বলছেন, দিল্লির দাঙ্গা না কি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়; সিএএ ও এনআরসি নাকি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমরা বলতে চাই, এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়।“আপনারা অবিলম্বে দিল্লির সহিংসতা ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান এবং নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণ বাতিল ঘোষণার করুন। নরেন্দ্র মোদী যদি বাংলাদেশে আসেন, তাহলে আমরা ছাত্র-জনতা পুরো ঢাকা শহর অচল করে দেব।”ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাখাওয়াত ফাহাদ বলেন, “বলা হচ্ছে ভারতে দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে দাঙ্গা চলছে। আসলে এটি দাঙ্গা নয়, এটি রাষ্ট্রীয় ফ্যাসিবাদ। ফ্যাসিস্ট মোদী ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সৃষ্টি করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। তার আইডোলজি জনগণের উপর চাপিয়ে দিয়ে সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী রাষ্ট্র কায়েম করতে চায়।“এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়বে। আমরা চাই না ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে ভারতের মতো বাংলাদেশে দাঙ্গার সৃষ্টি হোক।”সমাবেশ শেষে প্রতিবেশী দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। এসময় সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই হবে এক সাথে, মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াই হবে এক সাথে’, ‘জ্বালো রে জ্বালো আগুন জ্বালো’, ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’ স্লোগান দেন।
অন্যদের মধ্যে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অনিক রায়, ঢাকা মহানগর ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জওহরলাল রায়সহ শতাধিক নেতা-কর্মী প্রতিবাদ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।পরে বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ভারতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও।‘মোরা একই বৃত্তে দুটি কুসুম, হিন্দু মুসলিম-ঐক্যের ডাক’ স্লোগানে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে অংশ নেন তারা। ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন, মুক্তিফোরামের সভাপতি অনুপম দেবাশীষ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।