এই দিনে ২৮ ফেব্রুয়ারি
প্রান্তডেস্ক:গিরিশচন্দ্র ঘোষ প্রখ্যাত নাট্যকার, নাট্যপরিচালক, মঞ্চাভিনেতা। ১৮৪৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতার বাগবাজারে জন্মগ্রহণ করেন। এন্ট্রান্স পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সমাপ্তি ঘটে। তবে পরে বন্ধু ব্রজবিহারী সোমের প্রভাবে পড়ালেখায় আত্মনিয়োগ করেন। একটি কোম্পানিতে বুককিপার পদে চাকরির পাশাপাশি নানা বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের প্রভাবে গান, কবিতা ও পরে নাট্যমঞ্চের জন্য নাটক লিখতে শুরু করেন। ১৮৬৭ সালে ‘শর্মিষ্ঠা’ নাটকের গীতিকার হিসেবে নাট্যজগতে প্রবেশ। পরে দীনবন্ধু মিত্রের ‘সধবার একাদশী’তে নিমচাঁদ চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৮৮০ সালে তিনি পার্কার কোম্পানির চাকরি ছেড়ে গ্রেট ন্যাশনাল থিয়েটারের ম্যানেজার হন। তার রচিত প্রথম মৌলিক নাটক ‘আগমনী’(১৮৭৭)। পৌরাণিক, ঐতিহাসিক ও সামাজিক বিষয়ে রচিত তার নাটকের সংখ্যা মোট ৮০। এর মধ্যে ‘সীতার বনবাস’, ‘সীতাহরণ’, ‘প্রফুল্ল’, ‘জনা’, ‘সিরাজদ্দৌলা’ ইত্যাদি নাটক জনপ্রিয় ছিল। তিনি শেকসপিয়ারের ‘ম্যাকবেথ’-এর বাংলা অনুবাদ করেন। এছাড়া বঙ্কিমচন্দ্রের ‘মৃণালিনী, ‘বিষবৃক্ষ’ ও ‘দুর্গেশনন্দিনী’, মধুসূদনের ‘মেঘনাদবধ’ কাব্য ও নবীনচন্দ্রের ‘পলাশীর যুদ্ধ’ কাব্যের নাট্যরূপ দেন। অনেক নাটকে তিনি নিজে অভিনয় করেছেন এবং অনেক অভিনেতা তৈরি করেছেন। গিরিশচন্দ্র মধুসূদনের চৌদ্দ মাত্রার অমিত্রাক্ষর ছন্দকে ভেঙে অভিনয়ের উপযোগী ছোট ছোট ছত্রে বিন্যস্ত করেন। তার নামানুসারে এ ছন্দের নাম হয় ‘গৈরিশ ছন্দ’। তিনি ১৮৮৩ থেকে ১৯০৭ সাল পর্যন্ত ২৪ বছর ‘স্টার’, ‘এমারেল্ড’, ‘মিনার্ভা’, ‘ক্লাসিক’, ‘কোহিনূর’ প্রভৃতি রঙ্গালয় পরিচালনা করেন। ১৯০৮ সালে তিনি মিনার্ভার নাট্যাধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন এবং আমৃত্যু তাদের সঙ্গেই ছিলেন। ১৯১২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।(সৌজন্যে:দেশরূপান্তর)