গ্রেফতার ডাকাত দল সর্দার গুল্লি কামাল
প্রান্তপ্রতিবেদক: সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে যুবকদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে ৩০ সদস্যের ডাকাত দল। ওই সংগঠনের সদস্যদের মাধ্যমেই প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটের বিভিন্ন গ্রাম ও বাসা বাড়িতে সংগঠিত হচ্ছে চুরি-ডাকাতি।
ডাকাত চক্রের এ সংগঠনের সদস্যরা একজন অপর জনকে চেনার জন্য ব্যবহার করে বিশেষ কোড। ডাকাতির মাধ্যমে লুন্ঠিত মালামালের একটা অংশ ব্যায় হয় সকল সদস্যদের সার্বিক কল্যাণে। অপরাধমূলক ওই সংগঠনটির কোন সদস্য ডাকাতিকালে পুলিশের হাতে ধরা পড়লে কেউ কোনো প্রকার তথ্য প্রকাশ করবে না বলে অপরাধ সংগঠন নেতৃত্বদানকারীদের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধও রয়েছে সদস্যরা।
এছাড়া ওই ডাকাতি সংগঠনের ৩০ সদস্যের কোনো সদস্য গ্রেফতার বা ঝামেলায় পড়লে তার পারিবারিক খরচ সংগঠনের পক্ষ থেকে বহন করা হয়। বুধবার দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গুল্লি কামাল নামের এক ব্যাক্তিকে গ্রেফতারের পর এমন সংগঠন ও ডাকাত দলের সদস্যদের ভয়াবহ তথ্য পেয়েছে ওসমানীনগর থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত গুল্লি কামাল (৪৫) জকিগঞ্জ উপজেলার শাহগলি গ্রামের মৃত আনু মিয়ার পুত্র। সে একাধিক ডাকাতির মামলার পলাতক আসামী বলেও জানায় পুলিশ। এছাড়া সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় কামালের একাধিক স্থায়ী ও অস্থায়ী বাসা বাড়ি রয়েছে বলে নিশ্চিত করে থানা পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার গুল্লি কামালের বরাত দিয়ে ডাকাত দলের ওই সংগঠনের বিষয়ে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের এমন তথ্য প্রদান করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত ২৯ জানুয়ারি ওসমানীনগর উপজেলার সিরাজনগর গ্রামে বুরুঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা মকদ্দুছ আলীর বাড়িতে ডাকাতি সংঘটিত হয়। ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে নগদ টাকাসহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতদের হামলায় চেয়ারম্যানের স্ত্রী ও চাচাত ভাই আহত হন। এ ঘটনায় মকদ্দুছ আলীর আত্মীয় রপু মিয়া বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
এই মামলার সূত্র ধরে ওসমানীনগর থানা পুলিশ বুধবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওসমানীনগরের বাংলাবাজার এলাকা অভিযান চালিয়ে আবুল কালাম ওরফে আবুল কাশেম ওরফে গুল্লি কালাম ওরফে গুল্লী কামালকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে তার ভিন্ন ভিন্ন নামের বিষয়টি স্বীকার করে ও ৩০ সদস্যের ডাকাত দলের সংগঠনের নেতৃত্ব দেয়ার বিষয়টিও প্রকাশ পায়।
গ্রেফতারকৃত গুল্লি কামাল ওসমানীনগরের মকদ্দুছ আলীর বাড়িসহ সংগঠিত বিভিন্ন ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে পুলিশ। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পাওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে প্রেরণ করে রিমান্ডের আবেদন করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাশেদ মোবারক গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গুল্লি কামালকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ৩০ সদস্যের ডাকাত দল সংগঠনের সক্রিয় সদস্য বলে জানা গেছে। ওই দলের নেতৃত্বে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি সংঘটিত হচ্ছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ডাকাতির সাথে অনান্য জড়িতদের গ্রেফতার এবং কথিত সংগঠনটির সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে থানা পুলিশ তৎপর রয়েছে।