পুলিশের ব্যর্থতায় দিল্লিতে সেনা মোতায়েন চাইছেন কেজরিওয়াল
প্রান্তডেস্ক:ভারতের মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইনবিরোধী বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৩৪ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লিতে তিন দিন ধরে চলা ওই সংঘর্ষে বেছে বেছে মুসলিমদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।এমন পরিস্থিতিতে হিন্দুত্ববাদীদের তাণ্ডবে সৃষ্ট সহিংসতা সামাল দিতে দিল্লি পুলিশ ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে সেনা মোতায়েন চেয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।দ্য ওয়ারের বরাত দিয়ে আলজাজিরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার সংঘর্ষ চলকালে নয়াদিল্লির একটি প্রাচীন মসজিদে আগুন লাগানো হয়। ‘জয় শ্রী রাম’ এবং ‘হিন্দুওকা হিন্দুস্তান’ স্লোগান দিয়ে একদল সশস্ত্র হিন্দুত্ববাদী এই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটায়।ওই দুর্বৃত্তরা মসজিদের মিনার থেকে মাইক ফেলে দিয়ে সেখানে ভগবান হনুমানের ছবিসংবলিত পতাকা লাগায়।এ সময় মসজিদ কম্পাউন্ডের কয়েকটি দোকানে হামলা করে লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। অথচ ঘটনাস্থলে গিয়ে কোনো পুলিশের উপস্থিতি দেখেননি সাংবাদিকরা।এ ঘটনার পর দিনই বুধবার দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি পাঠিয়েছেন কেজরিওয়াল।মঙ্গলবারই দিল্লির পরিস্থিতি নিয়ে টুইটারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কেজরিওয়াল।তিনি টুইট করেন, ‘রাতভর দিল্লির অনেক বাসিন্দার সঙ্গে কথা হয়েছে। পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। শত রকম চেষ্টা করেও এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের এমন ব্যর্থতায় মানুষ আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে। এবার সেনা নামানোর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সব জায়গায় অবিলম্বে কারফিউ জারি করা উচিত। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছি আমি।’তবে কেজরিওয়ালের এমন টুইট ও আবেদনে মঙ্গলবার ভ্রূক্ষেপ করেননি অমিত শাহ।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে দাবি করে সেনার পরিবর্তে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েনের পক্ষে মত দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।দিল্লি পরিস্থিতি নিয়ে কেজরিওয়ালের ভূমিকাতেও সন্তুষ্ট নন স্থানীয় জনতা। কেননা সেনা মোতায়েনের পক্ষে আবেদন করলেও গত তিন দিনে দিল্লি পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার ব্যাপক অভিযোগ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।এদিকে দিল্লিতে হিন্দুত্ববাদীদের তাণ্ডব ঠেকাতে অমিত শাহের সঙ্গে একদফা বৈঠক করেছেন কেজরিওয়াল।এরই মধ্যে বুধবার সকালেও সহিংসতা অব্যাহত ছিল। এদিন মুসলমানদের বাড়ি-সম্পত্তিতে হামলা করতে দেখা গেছে।তবে কোথাও কোথাও মুসলমানদের বাড়িঘর-মসজিদ সুরক্ষায় স্থানীয় হিন্দুদের টহল দিতেও দেখা গেছে।উত্তরপূর্ব দিল্লির জাফরাবাদ, বাবরপুর, ব্রাহামপুর, গোরাখপার্ক, মৌজপুর, ভাজানপুরা, কবিরনগর, চান্দবাগ, গোকুলপুরি, কারওয়াল নগর, কাজুরিখাস ও কারদুমপুরেও দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে।