মুজিববর্ষের উৎসব করা হচ্ছে খালেদা জিয়াকে বন্দি রেখে
প্রান্তডেস্ক:বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে উৎসব করে মুজিববর্ষ পালন করা হচ্ছে। অথচ স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন খালেদা জিয়া। গতকাল রবিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শ্রমিক দল আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল দুপুরে হাইকোর্টে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন শুনানির আগে এ মানববন্ধনে বিএনপি মহাসচিব আশা প্রকাশ করে বলেন, বিচার বিভাগ তার স্বাধীনতা রক্ষা করবে। সত্যিকার অর্থেই এই মামলায় যে রায় হওয়া উচিত, সেই রায় হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকের এ মানববন্ধনটি করার কথা ছিল গত বৃহস্পতিবার। সেদিন আমাদের এই সমাবেশ করতে দেওয়া হয় নাই। আমরা এ দেশ স্বাধীন করেছি কি এর জন্যই? প্রতিবাদ করতে পারব না, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারব না? কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের সেই চরিত্র নয়।’
মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন সময়ে খালেদা জিয়ার নানা ভূমিকার কথা স্মরণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরও আমাদের গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রের মায়ের জন্য মানববন্ধন করতে হয়। এ লজ্জা রাখার জায়গা নেই আমাদের।’ তিনি বলেন, সংবিধান অনুয়ায়ী জামিন খালেদা জিয়ার প্রাপ্য হক ও অধিকার। হক ও অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। একই রকম মামলায় সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হুদা, সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও মহীউদ্দীন খান আলমগীর জামিনে আছেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ আদালতে বিশ্বাস করি। বিশ্বাস করি বলেই বারবার যাই। আশা করি, ন্যায়বিচার পাব। কিন্তু দুর্ভাগ্য, এই ফ্যাসিস্ট সরকার আদালতকেও নিয়ন্ত্রণ করছে। খালেদা জিয়া সর্বোচ্চ আদালতেই ন্যায়বিচার পাননি।’ দেশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, শ্রমিকদের প্রকৃত আয় বাড়ছে না। ব্যবসায় বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পোশাক কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সরকার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হচ্ছে।
‘নিখোঁজ হওয়ার’ ১৮ মাস পর গত শুক্রবার বাড়ি ফিরেছেন সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা হাসিনুর রহমান। এ প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, গুম হয়ে যারা ফিরে এসেছেন, তারা কথা বলছেন না। এ ছাড়া এখনো অনেক মানুষ নিখোঁজ। গুম, হত্যা, নির্যাতন, মিথ্যা মামলা দিয়ে সরকার একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে চায়। এ সময় সরকারকে পদত্যাগ করে পুনরায় নির্বাচনের দাবিও জানান বিএনপি মহাসচিব।
শ্রমিক দল সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, শ্রমিক দলের কার্যকরী সভাপতি সালাউদ্দিন সরকার প্রমুখ।