এই দিনে ১৪ ফেব্রুয়ারি
প্রান্তডেস্ক:চিত্রশিল্পী, শিল্পরসিক ও মঞ্চাভিনেতা গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে ১৮৬৭ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর। ১৪ বছর বয়সে পিতৃহারা হলে তার স্কুলের পড়াশোনা বন্ধ হয়। শুরু হয় জমিদারির কাজ এবং পরিবারের প্রধান হিসেবে সামাজিক দায়িত্ব পালন। কিন্তু ভারতীয় ও পাশ্চাত্য সাহিত্যে তার ছিল প্রবল আগ্রহ। তিনি হরিনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পাশ্চাত্য জলরঙে ছবি আঁকা শেখেন, তবে জাপানি শিল্পী ইয়োকোহামার দ্বারা প্রভাবান্বিত হন। ১৯১২ সালে রবীন্দ্রনাথের জীবনস্মৃতির জন্য কয়েকটি চিত্র অঙ্কন করেন, যেগুলোতে জাপানি প্রভাব স্পষ্ট। ১৯০৭ সালে স্থাপিত ইন্ডিয়ান সোসাইটি অব ওরিয়েন্টাল আর্ট তার প্রচেষ্টায় নবজীবন পায়। তিনি ধারাবাহিকভাবে শিল্প সম্পর্কে বক্তৃতার পরিকল্পনা ও শিল্প সম্পর্কীয় পত্রিকা প্রকাশনার মাধ্যমে এর প্রাণসঞ্চার করেন। ১৯২০ সালের পর তার শিল্পীজীবনের পরিবর্তন লক্ষ করা যায় এবং মৃত্যু ও অতিলৌকিক জগতের কিছু প্রতীকী অনুভূতির প্রকাশ ফুটে ওঠে। আধুনিক চিত্রকলার ক্ষেত্রে কালি-তুলি কাজের
পথিকৃৎ। তিনি শুধু একজন চিত্রকরই ছিলেন না, দেশীয় ঐতিহ্য অনুসরণে আসবাবপত্রের নকশা অঙ্কনে তার মৌলিকতা অনস্বীকার্য। বিশ শতকের প্রথম দিকে স্বদেশি আন্দোলনে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের সময় থেকে সংরক্ষিত পাশ্চাত্য রীতির বিলাসবহুল ফুলদানি ও ভিক্টোরীয় আমলের আসবাবপত্র জোড়াসাঁকোর পৈতৃক বাড়ি থেকে সরিয়ে স্বদেশজাত দ্রব্যসম্ভারের পুনরুদ্ভাবনে অবদান রাখেন। অভিনয়কলায়ও তার দক্ষতা ছিল। তিনি জোড়াসাঁকোর বিচিত্রা হলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ফাল্গুনী নাটক মঞ্চায়ন করেন এবং স্বয়ং রাজার ভূমিকায় অভিনয় করেন। ১৯৩৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।