দৌলতদিয়ার যৌনকর্মীর দাফন হলো ধর্মীয় রীতিতে
প্রন্তডেস্ক:দৌলতদিয়ার যৌনপল্লীর কেউ মারা গেলে তার দেহ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হতো। বছর কুড়ি আগে দাফনের জন্য একখণ্ড জমি পায় তারা। রাতে জানাজা ছাড়াই ডোমদের দিয়ে লাশ মাটিচাপা দেওয়া হতো সেখানে। সেই প্রথা ভেঙে প্রথমবারের মতো এখানকার একজনের দাফন সম্পন্ন হলো ইসলামি নিয়ম অনুযায়ী।
এই যৌনপল্লীর হালিমা বেগমের (৬৫) দাফনের পর কয়েকশ নারী তার কবরের পাশে জড়ো হয়েছিলেন। সেখানে ছিলেন হালিমার মেয়ে লক্ষ্মী। মায়ের পথ ধরে তাকেও এই পেশায় যেতে হয়েছে। তিনি জানান, “এভাবে মায়ের দাফন হবে কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি। শেষ যাত্রায় মানুষের মতো আচরণ করা হয়েছে আমার মায়ের সঙ্গে।”
মুসলিমপ্রধান বাংলাদেশে গণিকবৃত্তিকে অনৈতিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সে কারণেই এই পেশায় জড়িতদের ধর্মীয় রীতিতে দাফনে এতদিন পর্যন্ত ধর্মীয় বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
হালিমার জানাজার জন্য ইমামকে রাজি করানোর অনুরোধ নিয়ে ওই পল্লীর ছয়জন গিয়েছিলেন পুলিশের কাছে। পুলিশ কর্মকর্তা আশিকুর রহমান স্থানীয় একজন ইমামকে জানাজার কথা বলেন। “জানাজা করানোর জন্য ইমাম রাজি হচ্ছিলেন না। যৌনকর্মীর জানাজা করানোয় কোথায় নিষেধ রয়েছে জানতে চাইলে তিনি অনেকটা বাধ্য হয়েই রাজি হন।”
হালিমা বেগম যখন দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে আসেন তখন মাত্র ১২ বছর বয়স ছিল তার। প্রায় ১,২০০ যৌনকর্মী রয়েছেন এই পল্লীতে।
ঔপনিবেশিক আমলে ব্রিটিশরা এই যৌনপল্লীর গোড়াপত্তন করে। ১৯৮৮ সালে স্থানীয় লোকজন এই পল্লীতে আগুন দেওয়ার পর ফেরি ঘাটের কাছে যৌনপল্লীটি সরে আসে।