দেড় বছরেও পাসপোর্ট পাননি সিলেটের মুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাক!
: প্রান্তডেস্ক: পাসপোর্ট রিনিউয়ের জন্য ২০১৮ সালের মে মাসে আবেদন করেছিলেন সিলেটের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক (এম.এ রাজ্জাক)। ২০১৮ ও ২০১৯ গত হয়ে চলছে ২০২০ সাল। দেড় বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও পাসপোর্ট ফেরত পাননি তিনি। এ নিয়ে আদালতের দ্বারস্তও হয়েছেন এই মুক্তিযোদ্ধা, আদালত পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিতে নির্দেশও দিয়েছেন। তবু পাসপোর্টটি হাতে পাওয়ার ‘সৌভাগ্য’ হয়নি তার!
এদিকে, ওই মুক্তিযোদ্ধার আমেরিকার গ্রিন কার্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার বাকি আছে আর মাত্র ৭ মাস। এর ভিতরে পাসপোর্ট হাতে না পেলে আমেরিকার গ্রিন কার্ড হারাতে হবে তাকে। বিষয়টি নিয়ে এখন উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা।
জানা গেছে, সিলেট নগরীর রায়নগর দর্জিপাড়া এলাকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা এম.এ রাজ্জাক তার মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্টটির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে বিগত ২০১৮ সালের ১৩ মে আবেদন করেন। তার পাসপোর্ট নাম্বার হচ্ছে- ঈ১০২৬৮২১। আবেদনের পর তাকে দেয়া ডেলিভারি স্লিপে নতুন পাসপোর্ট প্রাপ্তির তারিখ ছিলো ২০১৮ সালের ৩ জুন। নির্দিষ্ট তারিখে পাসপোর্ট না পেয়ে এম.এ রাজ্জাক স্লিপের নির্ধারিত মোবাইল ফোন নাম্বারে ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে জানতে চাইলে জবাব আসে- ‘আপনার পাসপোর্টটির বিষয়ে যথেষ্ট তদন্ত প্রয়োজন’। পরবর্তীতে সিলেট পাসপোর্ট অফিসে বার বার ধর্না দিলেও তাকে একই কথা বলেন কর্মকর্তারা।
এ অবস্থায় রাজ্জাক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডিপার্টমেন্ট অব ইমিগ্রেশন এন্ড পাসপোর্ট’র মহাপরিচালক, সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক ও সহকারী পরিচালক বরাবরে গত বছরের এপ্রিল মাসে একটি উকিল নোটিশ প্রেরণ করেন। এর পরেও এ ব্যাপারে কোনো প্রতিকার না পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাক ১১ মাস আগে ঢাকা হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন (নং-৬৪৭৬/১৯) দাখিল করেন। এ রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর ও ৪ ডিসেম্বর দুটি শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
পরে গেল ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ‘এম.এ রাজ্জাকের পাসপোর্টটি ১৫ দিনের ভেতরে তার কাছে ফিরিয়ে দেয়া হোক’ এই মর্মে একটি নির্দেশ জারি করেন। উচ্চ আদালতের সেই নির্দেশটি গত ১৩ জানুয়ারি সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে এসে পৌঁছে। কিন্তু আদালত নির্দেশিত সেই ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও তার কাঙ্ক্ষিত পাসপোর্টটি আজ মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত হাতে পাননি মুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাক।
এ বিষয়ে জানতে গত রবিবার সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের এডি নুরুল হুদার নাম্বারে কল করা হলে তার একান্ত সহকারী (পিএ) ফোন কল রিসিভ করে বলেন, ‘স্যার জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কার্যালয়ে একটি মিটিংয়ে গেছেন। এ বিষয়ে তিনি ছাড়া আর কেউ কিছু বলতে পারবে না।’
এরপর থেকে আজ মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত টানা ৩ দিন এডি নুরুল হুদার মোবাইল ফোন নাম্বারে কল দিলেও কেউ রিসিভ করেনি।
আদালতের নির্দেশ মান্য করে মুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাক দ্রুত তার পাসপোর্ট ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।