১১১ বছরে দিল্লিতে ভোট দিচ্ছেন ‘বরিশালের’ কালীতারা
প্রান্তডেস্ক:মুক্তিযুদ্ধের সময় শরণার্থী শিবির থেকে ধীরে ধীরে ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কালীতারা মণ্ডল এখন দিল্লির সবচেয়ে বেশি বয়সী ভোটার। শনিবার সেখানকার বিধানসভা নির্বাচনে ভোট দেবেন তিনি।সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কালীতারা বলেন, ‘আমার মনে আছে আগে আঙুলে কালি লাগিয়ে ব্যালট পেপারে ভোট দিতাম। তারপরে ভোটিং মেশিন এল। এখন অবশ্য ভোট দেওয়া অনেক সহজ।’ছেলে সুখরঞ্জনের কথায়, ‘ভোট দিতে মা খুবই আগ্রহী হয়ে থাকেন। জ্ঞান হওয়ার পর থেকে কোনোদিন দেখিনি ভোটের দিন মা ভোট দিতে যাননি। গত লোকসভা ভোটেও মা ভোট দিয়েছিলেন। এবারেও তাই করবেন।’এক পোলিং অফিশিয়াল জানিয়েছেন, বাড়ি থেকে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার আবেদন করেছিলেন কালীতারা। কিন্তু দেরি হয়ে যাওয়ায় সেই সুবিধা দেওয়া যাচ্ছে না।কালীতারাকে রীতিমতো ভিআইপি মর্যাদা দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। তার ও তার পরিবারের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে।সামনের এপ্রিলেই ১১২ বছর বয়স হবে কালীতারার। কিন্তু এখনও সবকিছু স্পষ্ট মনে আছে তার। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে বরিশাল থেকে ভারতে যান। প্রথমে উদ্বাস্তু হিসেবে অন্ধ্রপ্রদেশে গিয়ে ওঠেন। সেখানেই তাদের ছোট ছেলে সুখরঞ্জনের জন্ম। কিন্তু ভিটেমাটির টানে কিছুদিন পরে ফের বাংলাদেশে ফিরে আসেন। সেবারেও বেশিদিন থাকতে পারেননি। আবার ভারতে গিয়ে মধ্যপ্রদেশে আশ্রয় নেন।কালীতারা শুরু থেকে কংগ্রেসের সমর্থক। ২০১৪ সালে এক ভোটের সময় জানান তিনি সব সময় ইন্দিরা গান্ধীকে ভোট দিয়েছেন, ‘সেই সময় ইন্দিরা গান্ধী আমাদের জন্য যা করেছেন, তা আজও ভুলতে পারি না। চাল, ডাল, জামাকাপড়, অর্থ সবই পাঠিয়ে দিতেন আমাদের ত্রাণ শিবিরগুলোয়। ওই শিবিরেই যখন আমার মেজো ছেলের বিয়ে হল, সরকার থেকে নতুন শাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল উপহার হিসেবে। শুধু আমরা নয়, সবার জন্যই ছিল এই ব্যবস্থা।’