৪৫০ কোটি টাকা ভারতে পাচারের অভিযোগে
প্রতিবেদক :: অবৈধ সম্পদ অর্জন ও হুন্ডির মাধ্যমে ৪৫০ কোটি টাকা ভারতে পাচারের অভিযোগে সিলেটের গোয়াইনঘাট থানার ওসি আব্দুল আহাদসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই তদন্ত করছে।
বিষয়টি আজ সোমবার সিলেটভিউকে নিশ্চিত করেছেন দুদক, সিলেটের উপ-পরিচালক নূর-ই-আলম।
জানা গেছে, ওসি আব্দুল আহাদ আগে সিলেটের কানাইঘাট থানায় দায়িত্বরত ছিলেন। সেখান থেকে তাকে গোয়াইনঘাট থানায় বদলি করা হয়।
গেল বছরের ১০ অক্টোবর আইনজীবী মঈনুল হক বুলবুল সিলেটের বিশেষ জজ আদালতে ওসি আব্দুল আহাদসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- কানাইঘাটের দীঘিরপাড় পূর্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী হোসেন কাজল, দর্পনগর পশ্চিম গ্রামের জুনাব আলীর ছেলে ও এমসি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তাজিম উদ্দিন, একই গ্রামের জহিরুল ইসলাম জহির, বটল হাজীর ছেলে ও ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবু রায়হান পাভেল, মৃত ফরিদ আলীর ছেলে মুসলিম উদ্দিন, মাছুগ্রাম গ্রামের উনু মিয়ার ছেলে ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মামুন উদ্দিন এবং দক্ষিণ কুয়রেরমাটি গ্রামের মুতলিব শেখের ছেলে শাহাব উদ্দিন।
মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, কানাইঘাট উপজেলার সড়কের বাজারে আবদুল গফুর ওয়াকফ স্টেটের ভূমি ব্যবহার করে কানাইঘাট থানার তৎকালীন ওসি আবদুল আহাদের প্রত্যক্ষ মদদে চেয়ারম্যান আলী হোসেন কাজল ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে মামুন উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে আবু রায়হান পাভেলকে বাজারের হাসিল আদায়কারী সাজিয়ে অবৈধ পশুর হাট বসিয়ে পুলিশ ও বিজিবির নামে ঘুষের টাকা আদায় করেন। গেল বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত এ টাকা আদায় করা হয়। বাজারে ভারত থেকে গবাদিপশু চোরাইভাবে আনতে বাংলাদেশি ৪৫০ কোটি টাকা আলী হোসেন কাজল ও তাজিম উদ্দিন তাদের নিযুক্ত লোকজনের মাধ্যমে হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করেন ভারতে। এছাড়া টাকা পাচার ও চোরাচালানের পশুর হাট পরিচালনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নামে সাড়ে ৪ কোটি টাকা এ অবৈধ বাজার থেকে আদায় করা হয়।
জানা গেছে, আদালতে গত ১০ ও ১৩ অক্টোবর দুই দফা শুনানি হয়। পরে ১৪ অক্টোবর মামলাটি আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), সিলেটকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
দুদক গত ৫ জানুয়ারি গোয়াইনঘাট থানার ওসি আব্দুল আহাদকে নোটিশ (স্মারক নং-০০.০১.৯১০০.৬৬২.০১.০৫৮.১৯.২৬) পাঠায়। অবৈধ সম্পদক অর্জন ও হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে ৪৫০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয়ে বক্তব্য প্রদানের জন্য ১২ জানুয়ারি ওসিকে দুদক সিলেট কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয় নোটিশে।
দুদক, সিলেটের উপ-পরিচালক নূর-ই-আলম সিলেটভিউকে জানান, ওসি আব্দুল আহাদ নির্ধারিত সময়েই হাজির হয়ে তার বক্তব্য প্রদান করেছেন।
উপ-পরচালক বলেন, ‘মামলাটি তদন্তাধীন। এ বিষয়ে তাই বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়।’
মামলার বাদী আইনজীবী মঈনুল হক বুলবুল সিলেটভিউকে জানান, দুদকের তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের বক্তব্য জানতে নোটিশ দিয়েছে দুদক। কেউ কেউ তাদের বক্তব্য দিয়েছেন, কেউ কেউ সময় নিয়েছেন।b